শুক্রবার, ৬ জুন, ২০১৪

মদ নিষিদ্ধ করে আইন পাস usa

১৯৩০ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্টে, কনগ্রেস মদ নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাস করল। সুবহানাল্লাহ, মুসলিম-অমুসলিম সকলেই বুঝতে পারে মদ খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে আমেরিকার সরকার এই আইনটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিল। এই ঘটনার পর প্রায় ৫ লক্ষ লোক জেলে গেল, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় হল এই আইন বাস্তবায়নে,খুন হল হাজার হাজার লোক।

মজার ব্যাপার হল, মদ খাওয়ার পরিমাণে কম বেশ হলই না, উপরন্তু লোকজন নিজের ঘরে মদের তৈরি করতে শুরু করল। মদ উৎপাদনের প্রক্রিয়া বেশ অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় অসুখ-বিসুখ ছড়িয়ে পড়ল। চার বছরের দুর্বিষহ সময়ের পর আমেরিকার সরকার এই আইন বাতি করল। তথাকথিত পরাক্রমশালী আমেরিকা এই আইন প্রয়োগ করতে পারল না,বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি মদ নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হল।

এবার আসুন আমরা ১৪০০ বছর আগে ফিরে যাই। জিবরীল (আঃ) রাসূল (সাঃ) এর কাছে আয়াত নিয়ে হাজির হলেন,

হে মুমিনগণ,এই যে মদ,জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। অতএব,এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।[সূরা মায়িদাঃ৯০]

মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এই আয়াতটি আল্লাহর পক্ষে থেকে রাসূল (সাঃ) এর কাছে নাযিল হল। রাসূল (সাঃ) কোন পুলিশবাহিনী, সেনাবাহনী কিংবা ন্যাশনাল গার্ডের সাহায্য ছাড়া সাহাবাদের কাছে এই আয়াতটি পড়ে শুনালেন। সাহাবারা এটা শোনামাত্র রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে ঘোষণা করলেন, মদ খাওয়ার আর কোন বৈধতা ইসলামে নেই।

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, “আমি কয়জন সাহাবাকে মদ পরিবেশন করছিলাম এবং আমরা তখন শুনলাম রাস্তায় ঘোষণা দেয়া হচ্ছে ‘মদ খাওয়া এখন থেকে হারাম’, তৎক্ষণাৎ আমি হাত থেকে মদের জগ ছুড়ে ফেললাম এবং সাহাবারা সকলে হাত থেকে মদের গ্লাস ফেলে দিলেন। যাদের মুখে মদ লেগে ছিল, তারা সেটা মুখ থেকে থু থু দিয়ে ফেলে দিলেন।তাদের মধ্যে এমন অনেকে ছিলেন যারা মদ গিলে ফেলেছেন বিধায় বমি করে পেট থেকে মদটুকু উগলে দিতে চেষ্টা করলেন। বলা হয়ে থাকে, মদীনার রাস্তায় মদের বন্যা বয়ে গিয়েছিল।

মদ হারাম এই খবর শোনামাত্র সকলের তৎক্ষণাৎভাবে সে আদেশ পালন করল, কোন পুলিশের ভয় ছাড়া, US কংগ্রেস কিংবা ন্যাশনাল গার্ডের হস্তক্ষেপ ছাড়া। প্রয়োজন হল না কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা লক্ষ ডলারের। কাউকে জেলে ছোড়ার প্রয়োজনও পড়ল না, বাস্তবায়িত হল আল্লাহর হুকুম, কেন ? কিভাবে একই আদেশ মদীনায় কাজ করল কিন্তু আমেরিকায় নয় ? পার্থক্যটা ঈমানে, তাক্বওয়ায়।

সাহাবারা নিজেদেরকে এভাবেই আল্লাহর দেয়া আদেশগুলো মানতে নিজেদের প্রস্তুত করেছিলেন, আমাদেরকেও তা করতে হবে। আর এটা সম্ভব হবে তখনই যখন আমরা আখিরাতের ব্যাপারে চিন্তা করব, আখিরাত সম্পর্কে জানব এবং কথা বলব। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন