সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৪

কষ্টিপাথর দিলামঃ পরখ করে দেখুন

ome » জিহাদ ও কিতাল » কষ্টিপাথর দিলামঃ পরখ করে দেখুন কারা সত্যের উপর অটুট!

কষ্টিপাথর দিলামঃ পরখ করে দেখুন কারা সত্যের উপর অটুট!

কিছু কিছু কথা বা ছোট ছোট লেখার মধ্যে আল্লাহ্‌ কখনো কখনো এমন কিছু ঢেলে দেন যে তা অনন্ত যৌবন লাভ করে। কোনো প্রকার জরা-জীর্ণতা কখনোই তাকে আর স্পর্শ করতে পারে না। খুব অনুভূতি হয়তো এগুলোতে নাও থাকতে পারে কিন্তু নিষ্ঠাবান শ্রোতা বা পাঠকের জীবনে এগুলো ঘূর্ণি ঝড়ের মত একটা ইউ-টার্ন ঘটিয়ে দেয়। গত চৌদ্দশ বছরে আল্লাহ্‌র অনেক প্রিয় বান্দা এই ধরনের অনেক কথা বলে গেছেন। আমাদের যামানায় শাইখ আবদুল্লাহ্‌ আযযাম, শাইখ ইউসুফ আল উয়াইরি, শাইখ আওলাকি রহিমাহুল্লাহ্‌র কিছু কথাও আমার কাছে ঠিক তেমনই মনে হয়েছে। আল্লাহ্‌ এই তিনজনেরই শাহাদাতকে কবুল করুন। আমিন। আবার জীবিতদের মধ্যে শাইখ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি, শাইখ মাকদিসি হাফিযাহুমুল্লাহ্‌র কথা থেকেও ঠিক তেমন অনুভূতি পেয়ে আসছি। আল্লাহ্‌ তাদেরকে তাঁর দুশমনদের হাত থেকে হেফাযত করুন এবং আমাদেরকে তাদের ইলম দ্বারা অনেক বেশী উপকৃত হবার তৌফীক দান করুন। আমিন।
দীর্ঘ দেড় দশকের বেশী সময় থেকে এইসব সত্যবাদীদের কথা এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাদের নিষ্ঠাবান জীবনের উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখে এসেছি। তাদের বিভিন্ন মূল্যবান কথা থেকে যৎসামান্য যে কয়টা মণিমুক্তো কুড়োবার তাওফিক পেয়েছি তা দিয়ে নিজের জন্য ছোট ছোট মালা বানিয়ে আমার পকেট-নোটপ্যাডে টুকে রাখা আমার একটা নিয়মিত অভ্যাস। সময় পেলে একাকি এইসব নোট খুলে বারবার দেখা আর সিনার ভেতর খোদাই করে রাখার চেষ্টাতো আছেই। বিভিন্ন মজমায় প্রায়ই যেহেতু আমাকে “সঠিক মানহাজ কি এবং হক্বপন্থী কারা” টাইপ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়; তাই এ বিষয়ক মুযাকারার স্বার্থে বহুদিন আগেই সেরকমই একটা ছোট নোট লিখে রেখেছিলাম। এই নোট থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা ধারাবাহিক মুযাকারা করার সৌভাগ্যও আমার হয়েছে। পরে সম্ভবত ২০০৭-২০০৮ সালে আমি এটা ব্লগ আকারে পাবলিশ করি। ২০১১ সালে আম্রিকি মোড়লদের ইশারায় আমাকে প্রথমে মিশরে পরে তুর্কিতে এবং সবশেষে নিজ দেশে বন্দী করার পর আমার অতি অখ্যাত ‘বান্দারেজা’ সাইটটা বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে আমার প্রায় সব লেখাই হাতছাড়া হয়ে যায়। পরবর্তীতে দীর্ঘদিনের বন্দী এবং গুম নাটকের প্রাথমিক পর্ব শেষে বিভিন্ন ব্লগ থেকে এবং অন্যান্য সোর্স থেকে কিছু কিছু লেখার সম্পূর্ণ অথবা খণ্ডাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এই লেখাটার কোনো হদিসই মিলছিলো না। অথচ বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, জেল থেকে বের হবার পর ঠিক এই লেখাটাই পুনরায় পাবলিশের জন্য আমার ইনবক্সে সবচেয়ে বেশী অনুরোধ পেয়েছি। পুরোনো পাঠকদের মন্তব্য থেকে মনে হচ্ছিলো যেন আমি শুধু জীবনে মাত্র এই একটি লেখাই লিখেছি! যেন ঠিক এই লেখাটার কারণেই মানুষ আমাকে বান্দা রেজা নামে চেনে! ব্যাপক বিস্ময়ের সাথে বুঝার চেষ্টা করেছি কেন অধমের এই লেখাটাকে তারা এতটা গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। আল্লাহই এই রহস্যের ব্যাপারে সম্যক অবগত।
আলহামদুলিল্লাহ্‌ কিছুদিন আগে একাধিক ভাই লেখাটা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিঞ্চিৎ সম্পাদনের পর আপনাদের খিদমতে বিনয়ের সাথে আবার তা হাজির করলাম। তুচ্ছ বান্দার সামান্য এই লেখাটা দিয়ে যদি আল্লাহ্‌ কারো জীবনে সামান্যতমও কোনো ফায়দা পৌঁছান তবে বান্দা হিসেবে আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
উম্মাহর একটি দল সব সময় হকের উপর লড়াইরত থাকবে
উম্মাহর একটি দল সব সময় হক্বের উপর লড়াইরত থাকবে
কষ্টিপাথর দিলামঃ পরখ করে দেখুন কারা সত্যের উপর অটুট!
স্বর্ণকাররা যেমন শুধু কারো কথার উপর নির্ভর না করে খাঁটি সোনা পরখ করতে কষ্টিপাথর ব্যবহার করে থাকেন, তেমনি বিভিন্নরকম ইসলামী দলের হক্বপন্থী হবার মৌখিক দাবীর উপর নির্ভর না করে  হক্বপন্থীদের চিনে নিতে আল্লাহ্ তাআলাও দয়া করে আমাদেরকে কিছু দালিলিক কষ্টিপাথর দিয়েছেন, যেন আমরা বিভ্রান্ত না হই। আজ শিয়া, কাদিয়ানী বা পথভ্রষ্ট সুফীদের কথা বাদ দিলেও আহ্‌লুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আর মধ্যেই বিভিন্ন দল বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে বলছে যে আমরাই হক্ব, আমাদের পন্থাই হক্ব পন্থা, কেউ বলছে আমাদের আন্দোলনই একমাত্র ঈমানী আন্দোলন, আবার কেউ বলছেন, সলিউশান ফর দা হিউম্যানিটি, এতসব দাবীদারদের মধ্য থেকে কাকে আমরা বেছে নেবো? চলুন দেখে নিই আমাদের কষ্টিপাথর কী বলে।
এধরণের পরিস্থিতিতে ঈমানদারদের হিফাজত করার জন্য আল্লাহ্ তাআলা কুরআনের কিছু আয়াতকে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কিছু হাদীসকে কষ্টিপাথরের মতো উপস্থাপন করেছেন। এই সব কষ্টিপাথর দিয়ে আমরা চাইলে সহজেই হক্বপন্থীদেরকে শনাক্ত করতে পারি। এ পর্যায়ে আমরা সত্যিকার হক্বপন্থীদের বৈশিষ্ট্যসমূহ চিহ্নিত করার জন্য কুরআন-হাদিসে যেসব কষ্টিপাথর দেয়া হয়েছে তা থেকে কিছু উপস্থাপন করবো।
যারা হকের উপর আছেন কুরআনে তাদের নিদর্শনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে থেকে তারা যদি দ্বীন থেকে ফিরে যায় তাহলে অচিরেই আল্লাহ এক এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা ঈমানদারদের প্রতি হবে বিনম্র এবং কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনো নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। (সুরা মাইদাঃ ৫৪)
এখানে আল্লাহ তাআলা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত জামা’আতের যে সিফাতগুলো বর্ণনা করেছেন তা হচ্ছে
১ – আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসবেন
২ – তারা আল্লাহকে ভালবাসবে
৩ – তারা মুমিনদের প্রতি বিনম্র হবে
৪ – তারা কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে
৫ – তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত থাকবে এবং
৬ – তারা নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করবে না 
আলোচ্য আয়াতে উল্লেখিত ছয়টি গুণকে আল্লাহ্‌ তাআলা দ্বীন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যখনই কেউ দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে আল্লাহ্‌ খুব দ্রুতই তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে অন্য কোনো জাতিকে তাদের স্থানে নিয়ে আসবেন। তবে যাদেরকেই আনবেন তাদের মধ্যে এই গুণগুলো অবশ্যই থাকবে। অর্থাৎ এই গুণ বিশিষ্ট দলটিকে আল্লাহ্‌ তাআলা সবসময় বলবৎ রাখবেন।
বুদ্ধিমান এবং ঈমানদারের জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। সত্যবাদীরা বলুন তো, এই আয়াত অনুসারে আমাদের সময়ের হক্বপন্থীদের খুঁজে বের করা কি খুব কঠিন? এই একটি আয়াত নিয়েও যদি সত্য অনুসন্ধানীরা কিছু পড়াশোনা করেন তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন ইসলামী আন্দোলনের নামে ভ্রান্ত দলগুলোর ধোঁকা থেকে বেঁচে থেকে সঠিক দলকে খুঁজে নিতে সক্ষম হবেন। আল্লাহ্ যদি এই অধমকে তাওফিক দান করেন তবে খুব শীঘ্রই এই আয়াতে বর্ণিত প্রত্যেকটি  বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত ব্যাখায় নিয়ে ওলামায়ে কেরামের মতামত আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ্।
হাদীসের ভাষায় সত্যপন্থীদের বর্ননাঃ
আলোচনা সংক্ষিপ্ত রাখার স্বার্থে আমি শুধু দু’একটি হাদীস উল্লেখ করছি। আশা করি সত্যিকার ঈমানদারগণ উপকৃত হতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।
– সালামাহ বিন নুফাইল (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলাম, এমন সময় একজন লোক এসে তাকে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ, ঘোড়াগুলোকে (জিহাদের জন্য ব্যবহার না করে আস্তাবলে রেখে দিয়ে) অপদস্থ করা হচ্ছে এবং অস্ত্র নামিয়ে রাখা হয়েছে, আর কিছু লোক বলাবলি করছে যে, আর জিহাদ করতে হবে না, জিহাদ শেষ হয়ে গিয়েছে! রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
كَذَبُوا الآنَ الآنَ جَاءَ الْقِتَالُ وَلاَ يَزَالُ مِنْ أُمَّتِي أُمَّةٌ يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ وَيُزِيغُ اللَّهُ لَهُمْ قُلُوبَ أَقْوَامٍ وَيَرْزُقُهُمْ مِنْهُمْ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ وَحَتَّى يَأْتِيَ وَعْدُ اللَّهِ وَالْخَيْلُ مَعْقُودٌ فِي نَوَاصِيهَا الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
তারা মিথ্যা বলছে! জিহাদ তো কেবল শুরু হয়েছে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর পথে জিহাদ করতেই থাকবে। বরং আল্লাহ মানুষের মধ্য থেকে কারো কারো হৃদয়কে বক্র করে দিবেন যাতে তারা তাদের বিরদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং এবং এই কিতাল থেকে তাদেরকে তিনি রিযক্ব দান করবেন যতক্ষণ না ক্বিয়ামাত কায়েম হয় এবং আল্লাহ্‌র ওয়াদা এসে যায়। ঘোড়ার কপালে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত রহমত থাকবে (সুনান নাসায়ি, হাদিস নং ৩৫৬১ – সাহিহ)
দেখুন যারা বলে এই যামানায় জিহাদের দরকার নেই তারা কতবড় মিথ্যুক। বরং জিহাদকে চালু রাখার স্বার্থে আল্লাহ্‌ কারো কারো হৃদয়কে বক্র পর্যন্ত করে দেবেন। আর ন্যূনতম বোধ-বুদ্ধি রাখে এমন কাউকে আশা করি এটা আর ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলতে হবে না যে এখানে সেই জিহাদের কথা বলা হয়েছে যেখানে ঘোড়া এবং অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, নফস বা অন্য কিছু নয়। আর হক্বের উপর এই লড়াই (يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ) কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। চাই খিলাফাহ থাক আর না থাক। চাই ইসলামী রাষ্ট্র থাক আর না থাক। তাই ‘ইসলামী-রাষ্ট্র’ বা ‘খলীফাকে’ যারা জিহাদের জন্য পূর্বশর্ত হিসাবে জুড়ে দিয়েছেন তাদের যুক্তি কতটা সঙ্গত?
ইমাম মুসলিম (রহঃ) এই প্রসঙ্গে তাঁর সাহীহ মুসলিম গ্রন্থের ‘কিতাবুল ইমারাহ’ মধ্যে ”উম্মাহর একটি দল সব সময় হক্বের উপর লড়াইরত থাকবে” শিরোনামে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় রচনা করেছেন।
– জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
لَنْ يَبْرَحَ هَذَا الدِّينُ قَائِمًا يُقَاتِلُ عَلَيْهِ عِصَابَةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ
এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানের একটি দল এই দ্বীনের সংরক্ষণের জন্য কিয়ামাত পর্যন্ত কিতাল (يُقَاتِلُ যুদ্ধ) করতে থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭১৭, ই.ফা. ৪৮০০)
দেখুন যারা বলে দ্বীন সম্পূর্ণ মিটে গিয়ে পরিপূর্ণ জাহিলিয়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; অতএব আমাদেরকে আবার নতুন করে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে, তাদের দাবী কতটা ভ্রান্ত। আসলে দ্বীন কায়েমই আছে, আমদের শুধু নিজেকে তাদের সাথে কাতারবদ্ধ করতে হবে যারা দ্বীনের সংরক্ষণের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। একটু আন্তরিক ভাবে খুঁজে দেখুনতো কারা সেই দল।
– জাবির ইবন আব্দুল্লাহ্‌ (রাঃ) বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ
لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
আমার উম্মাতের একটি ত্বইফা (অল্পসংখ্যক লোক বিশিষ্ট দল) কিয়ামাত পর্যন্ত হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কিতাল (যুদ্ধ) করতে থাকবে। এবং তারা বিজয়ী থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭১৮, ই.ফা. ৪৮০১)
এই ত্বইফার (طَائِفَةٌ) অস্তিত্ব যদি কিয়ামাত পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে তাহলে আমাদের এই যুগেও অবশ্যই তা থাকবে। খুব কি কষ্ট হচ্ছে তাদের চিহ্নিত করতে? কেউ কেউ বলেন জিহাদ/কিতালের বা ত্বইফার জন্য খলীফা বা আমীরে-আম একটি পূর্বশর্ত। সেক্ষেত্রে তাইফা বা কিতাল যেহেতু কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে তাহলে তাদের শর্ত অনুযায়ী সেই তাইফা বা কিতালের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত একজন আমিরে-আম বা খলীফাও থাকতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে তারা যদি সত্যবাদী হয় তবে হাজির করুক তাদের কল্পিত সেই আমিরে-আম বা খলীফা।
– ইয়াজিদ ইবনে আসেম (রাঃ) বলেন, আমি মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানকে মিম্বারের ওপর দাঁড়িয়ে নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। এটা ছাড়া আর কোনো হাদীস আমি তাকে বর্ণনা করতে শুনিনি। মুয়াবিয়া (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ وَلاَ تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ عَلَى مَنْ نَاوَأَهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের বুঝ দান করেন। মুসলমানের একটি দল সর্বদা হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কিতাল (যুদ্ধ) করতে থাকবে এবং তাদের বিরোধীদের উপর কিয়ামাত পর্যন্ত বিজয়ী থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭২০, ই.ফা. ৪৮০৩)
সুবহানআল্লাহ্‌, দেখুন এই যামানাতেও যারা স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে সামান্য একে-৪৭ নিয়ে হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন তাদের অবস্থা। গোটা পৃথিবীর সকল পরাশক্তি এবং তাদের দোসররা সম্মিলিত ভাবেও তাদের সামান্যতম কাবু করতে পারছে না। বরং তাদের ভয়ে পুরো কাফের-মুনাফিক্বদের প্রাণ আজ প্রায় ওষ্ঠাগত। এর পরেও যারা বুঝবো না বলে মনে মনে পণ করে বসে আছেন তাদের থেকে আমরা সম্পূর্ণ দায়মুক্ত ইনশা আল্লাহ্‌। 
– আব্দুর রাহমান ইবনে শুমাসাহ আল মাহরি বলেন, আমি মাসলামা ইবনে মাখলাদের নিকট ছিলাম, এ সময় আব্দুল্লাহ ইবনে আমার ইবনুল আস (রাঃ) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্টতম লোকগুলো যখন পৃথিবীর বুকে অবশিষ্ট থাকবে তখনই ক্বিয়ামাত হবে। তারা জাহিলী যুগের লোকদের চেয়েও নিকৃষ্ট হবে। তারা আল্লাহর কাছে যা-ই চাইবে তাই তাদের দেয়া হবে। আব্দুর রাহমান ইবনে শুমাসাহ বলেন, তারা এই আলোচনায় রত ছিলেন এমন সময় উকবা ইবনে আমের (রাঃ) সেখানে উপস্থিত হলেন। মাসলামা তাকে বললেন, হে উকবা! আব্দুল্লাহ কী বলছে শুনুন। জবাবে উকবা (রাঃ) বলেনঃ তিনি অনেক অভিজ্ঞ। তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ
لاَ تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى أَمْرِ اللَّهِ قَاهِرِينَ لِعَدُوِّهِمْ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ
আমার উম্মতের একদল লোক সর্বদা আল্লাহর হুকুমের উপর অবিচল থাকার জন্য শত্রুর বিরুদ্ধে ক্বিতাল (লড়াই) করতে থাকবে। যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। এভাবে কিয়ামাতের মুহূর্ত এসে যাবে এবং তারা হক্ব প্রতিষ্ঠায় শত্রুর মোকাবেলা করতে থাকবে।
আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। অতঃপর আল্লাহ এমন এক বায়ু প্রবাহিত করবেন যা কস্তুরীর মতো সুগন্ধযুক্ত এবং রেশমের মতো মোলায়েম। অতঃপর তা এমন কোনো ব্যক্তিকে অবশিষ্ট রাখবে না যার অন্তরে সামান্য পরিমাণও ঈমান আছে। তা তাদের সবাইকে মৃত্যুর কোলে ঢলিয়ে দিবে। অতঃপর পৃথিবীতে কেবল নিকৃষ্টতম লোকগুলোই অবশিষ্ট থাকবে। আর তাদের উপর ক্বিয়ামাত কায়েম হবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদীস নং ৪৭২১, ই.ফা. ৪৮০৪)
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই ঠিক বলেছেন, “যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না।” কোনো বোমারু বিমান বা চোরাগোপ্তা ড্রোন তাদের সামান্যতম ভীত করতে পারবে না। সাদাকালো-হলুদ মিডিয়া অথবা কোনো দরবারি ফতোয়া তাদের মনোবল এতটুকুও কমাতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সমঝোতার প্রলোভন কিংবা নানারকম হুমকি-ধামকির কোনোটাই তাদের প্ররোচিত করতে পারবে না।
আমরা তাদের স্বীকৃতি দেই আর নাই দেই তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না (১) আল্লাহ্‌ তাদের ঠিকই ভালবাসেন আর (২) তারাও আল্লাহ্‌কেই সবচেয়ে বেশী ভালবাসেন। (৩) তারা নিজেদের রক্ত দিয়ে হলেও মুমিনদের রক্ষায় বিনম্র (৪) আর বি-৫২ বিমানের বিরুদ্ধে একে-৪৭ দিয়ে হলেও কাফেরদের প্রতি কঠোর। (৫) কেউ তাদের সহযোদ্ধা না হলেও তারা ঠিকই নির্ভীক চিত্তে জিহাদের ময়দানে অবিচল এবং (৬) রাম-সাম, যদু-মধু কারো নিন্দারই পরোয়া করার সময় তাদের নেই। এটা তাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ যা তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। আমরা তাঁর কাছেই হেদায়াতের প্রাচুর্য এবং দিশার জ্ঞান চাই। আবার একবার মিলিয়ে দেখুন সুরা মা’ঈদার ৫৪ নং আয়াত। মিলিয়ে দেখুন উল্লেখিত সবকটা হাদীস। দেখুন কাদের সাথে এর সবগুলো হুবহু মিলে যায়। খুবকি কঠিন? খুবকি অস্পষ্ট? নাকি দেখেও দেখতে চাচ্ছেন না?
এবার বিবেকবানদের বলছি, সত্য জানার এবং বুঝার জন্য সাত আসমানের উপর থেকে নাযিলকৃত ওহীর ইলমের উপর অর্থাৎ কুরআন এবং সহীহ হাদিসের উপর নির্ভর করুন। তাহলে অবশ্যই নিরাপদ থাকবেন। নিজের অথবা অন্য কারো কল্পনা প্রসূত আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন। হয় সত্য বলুন, না হয় চুপ থাকুন। ধোঁকাবাজ নফস অথবা ভীতি প্রদর্শনকারি বাতিলের প্রভাবে ভ্রান্তি ছড়াবেন না। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে সঠিক পথ দেখান এবং সঠিক পথে অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন (আমিন)।
ওয়াসসালাম বান্দা রেজা
শাওয়াল ১৪৩৪, সেপ্টেম্বার ২০১৩
www.facebook.com/BandaReza313
www.youtube.com/BandaReza313








গাযওয়াতুল হিন্দ হিন্দুস্তানের (চূড়ান্ত) যুদ্ধ

গাযওয়া ই হিন্দ – হিন্দুস্তানের (চূড়ান্ত) যুদ্ধ সম্পর্কিত হাদিস সমূহ

24 February 2014 at 10:23
গাযওয়া ই হিন্দ – হিন্দুস্তানের (চূড়ান্ত) যুদ্ধ




রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন, আমার উম্মহর দুইটি দলকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন।

১- যারা হিন্দের (ভারতের) বিরুদ্ধে লড়ে যাবে।
২- যারা হযরত ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গী হবে।

(সুত্র: মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ শরীফ)

আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ আমাকে বলেছেন যে, “এই উম্মাহর মধ্যে একটি দল সিন্ধ এবং হিন্দ এর দিকে অগ্রসর হবে।”
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বলেন, “আমি যদি এই অভিযানে শরীক হতে পারতাম এবং শহীদ হতে পারতাম তাহলে উত্তম হত; আর যদি আমি গাজী হয়ে ফিরে আসতাম তবে আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম, যাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিতেন।” (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

[মুসনাদে আহমাদ, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, আস সুনান আল মুজতাবা]


রেফারেন্স:

এই শব্দগুলো দিয়ে শুধুমাত্র ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) তার ‘মুসনাদে’ হাদিসটি বর্ণনা করেছন এবং ইবনে কাসির এই রেফারেন্সে হাদিসটির অনুলিপি তার ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ –তে উল্লেখ করেছেন।

ক্বাজী আহমাদ শাকির এই হাদিসের একটি সুন্দর স্থায়িভাব দিয়েছেন ‘মুসনাদে আহমাদের ব্যাখ্যা ও খোঁজে’ –তে।

ইমাম নিসাই হাদিসটি তার উভয় গ্রন্থ ‘আস সুনান আল মুজতাবা’ এবং ‘আস সুনান আল কুবরা’ –তে বর্ণনা করেছেন।
এর মাঝে নিম্নোক্ত শব্দ ব্যবহার করে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বলেন, “রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ (স) আমাদেরকে গাযওয়ায় হিন্দ সম্পর্কে ওয়াদা করেছেন। আমি যদি এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেতাম তাহলে আমি এর জন্য আমার সকল শক্তি ও সম্পদ ব্যয় করে দিতাম। যদি আমি এতে নিহত হতাম, তাহলে আমি অতি উত্তম শহীদদের একজন হতাম। আর যদি ফিরে আসতাম তবে একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম।”


ইমাম বায়হাকি (রাহিমাহুল্লাহ) অনুরূপ শব্দগুলোর উল্লেখ করেছেন ‘আস সুনান আল কুবরা’ –তে। তার আরকটি বর্ণনায় একটি শব্দ যোগ হয়েছে।


ইবনে দাউদের রেফারেন্সে, মাসদাদ আবু-ইসহাক ফাযারি সম্পর্কে বলেন যে তিনি বলতেন, “আমি যদি রোম শহরের যে গাযওয়াত গুলোতে অংশগ্রহণ করেছি তার বদলে মারবাদ (ভারত থেকে আরবের পূর্বে কিছু অঞ্চল) এর গাযওয়াতে অংশগ্রহণ করতে পারতাম!”


ইমাম বায়হাকি (রাহিমাহুল্লাহ) একই বর্ণনা সম্পর্কে তার ‘দালাইল আন নুবুওয়াহ’তে বলেছেন। এবং তার এই রেফারেন্সে, অনুরূপ বর্ণনা তুলে ধরেছেন ইমাম সুয়ুতি (রাহিমাহুল্লাহ) ‘ইন আল খাসাইস আল কুবরা’ –তে।


অধিকন্তু, নিম্নোক্ত হাদিস বর্ণনাকারীরা একই হাদিস সামান্য ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে বর্ণনা করেছেন,


• শায়খ আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) এই হাদিসটিকে অনুমোদন করেছেন।
• ইবনে কাসির অনুরূপ হাদিসটি ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’-তে ব্যবহার করেছেন।
• আবু নাঈম (রাহিমাহুল্লাহ) এটি ‘হুলিয়াত উল আউলিয়া’তে বর্ণনা করেছেন।
• ইমাম হাকিম (রাহিমাহুল্লাহ) এই হাদিসটি ‘আল মুস্তাদরাক আল সাহিহ’তে বর্ণনার পর নীরব থেকেছেন।
• তথাপি, ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) তার মুস্তাদরাক এ এটি তুলে দিয়েছেন।
• সাঈদ ইবন মানসুর (রাহিমাহুল্লাহ) এটি তার বই ‘আস সুনান’ -এ এটি বর্ণনা করেছেন।
• খতীব বাগদাদী তার বাগদাদের ইতিহাসে লিখেছেন যে ‘এর জন্য আমি নিজেকে অস্থির বানিয়ে ফেলতাম।’
• নাঈম বিন হাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ); ইমাম বুখারীর (রাহিমাহুল্লাহ) শিক্ষক এটি ‘আল ফিতান’ -এ লিখেছেন।
• ইবনে আসিম (রাহিমাহুল্লাহ) তার ‘আল জিহাদ’ গ্রন্থে লিখেছেন।
• ইবনে হাতীম (রাহিমাহুল্লাহ) তার ‘আল লা’ল’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, ‘যদি আমি নিহত হই, তবে আমি জীবিত থাকব আহার্য পেয়ে (শহীদ হিসেবে) এবং যদি ফিরে আসি, তবে হব মুক্ত।
• ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল তারিক আল কাবির’-এ বর্ণনা করেছেন।
• ইমাম মাযী হাদিসটি ‘তেহজিব উল কামাল’-এ বর্ণনা করেছেন।
• ইবনে হাযার আসকালানী হাদিসটি ‘তেহজিব আল তেহজিব’-এ বর্ণনা করেছেন।


উপরোক্ত সকলের লিখা অনুযায়ী এই হাদিসটি পুরোপুরি সঠিক এবং সুন্দর।




নবীজী মুহাম্মাদ ﷺ এর আজাদকৃত গোলাম হযরত সাওবান (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন,

“আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে।” (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

হযরত সাওবান (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) কে বলতে শুনেছেন যে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন) এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) কে শামে (সিরিয়া) পাবে।”

হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বলেন, “আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম। যখন আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়াতা’আলা আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা শামে (সিরিয়ায) হযরত ঈসা (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত। ওহ রাসূলুল্লাহ ﷺ! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ এর একজন সাহাবী।”
বর্ণনাকারী বলেন যে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ মুচকি হাসলেন এবং বললেন, “খুব কঠিন, খুব কঠিন!”

(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)

[মুসনাদে আহমাদ, আস সুনান আল মুজতাবা, আস সুনান আল কুবরা, আল মজাম আল অস্ত, আল জাম্য আল কাবীর]


রেফারেন্স:

• ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) ‘মুসনাদ’
• ইমাম নিসাই (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আস সুনান আল মুজতাবা’
• শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন
• তদ্রূপ ‘আস সুনান আল কুবরা’
• ইবনে আবি আসিম (রাহিমাহুল্লাহ) ‘কিতাবুল জিহাদ’
• ইবনে আদি (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল কামিল ফী যাউফা আর রীযাল’
• তাবরানী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল মজাম আল অস্ত’
• বায়হাকী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আস সুনান আল কুবরা’
• ইবনে কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’
• ইমাম ওয়েলমি (রাহিমাহুল্লাহ) ‘মুসনাদ আল-ফিরদাউস’
• ইমাম সুয়ুতি (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল জাম্য আল কাবীর’
• ইমাম মানভী (রাহিমাহুল্লাহ) আল জামায় আল কাবীরের তাফসীর ‘ফায়েয আল কাদের’
• ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল তারীক আল কাবীর’
• ইমাম মাযী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘তেহজিব আল কামাল’
• ইবনে আসাকার (রাহিমাহুল্লাহ) ‘দামাস্কাসের ইতিহাস’



হযরত কা’ব (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) কর্তৃক বর্ণিত রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ বলেন,

“জেরুসালেমের (বাই’তুল মুক্বাদ্দাস) একজন রাজা তার একটি সৈন্যদল হিন্দুস্তানের দিকে পাঠাবেন, যোদ্ধারা হিন্দের ভূমি ধ্বংস করে দিবে, এর অর্থ-ভান্ডার জয় করবে, তারপর রাজা এসব ধনদৌলত দিয়ে জেরুসালেম সজ্জিত করবেন, দলটি হিন্দের রাজাদের জেরুসালেমের রাজার দরবারে উপস্থিত করবে, তার সৈন্যসামন্ত তার নির্দেশে পূর্ব থেকে পাশ্চাত্য পর্যন্ত সকল এলাকা বিজয় করবে এবং হিন্দুস্তানে ততক্ষণ অবস্থান করবে যতক্ষন না দাজ্জালের ঘটনাটি ঘটে।”

রেফারেন্স:

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এর উস্তাদ নাঈম ইবন হাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) এই হাদিসটি বর্ণনা করেন তার ‘আল ফিতান’ গ্রন্থে। এতে, সেই উধৃতিকারীর নাম উল্লেখ নেই যে কা’ব (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু কিছু আরবী শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে, তাই এটা এর সাথে সংযুক্ত বলেই বিবেচিত হবে। এসব শব্দাবলী, “আলমুহকামউবনু না’ফি-ইন আম্মান হাদ্দাসাহু আন কাবিরিন।”




হযরত সাফওয়ান ইবনে উমরু (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বলেন, কিছু লোক তাকে বলেছেন যে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন,

“আমার উম্মাহর কিছু লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, এমনকি তারা হিন্দুস্তানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ অবস্থায় পাবে। আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা (শামের) সিরিয়া দিকে অগ্রসর হবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) কে সেখানে পাবে।” (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪১০)


রেফারেন্স:

নাঈম বিন হাম্মাদ এই হাদিসটি ‘আল ফিতান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। তবে হাদিসটি এর ক্রমানুযায়ী বিতর্কের পর্যায়ে আছে।



হযরত নাহীক ইবনে সারীম (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন, “নিঃসন্দেহে তোমরা মুশরিকদের (মূর্তিপূজারীদের) সঙ্গে যুদ্ধ করবে। এমনকি এই যুদ্ধে তোমাদের বেঁচে যাওয়া মুজাহিদরা উর্দুন (জর্ডান) নদীর তীরে দাজ্জালের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এই যুদ্ধে তোমরা পূর্ব দিকে অবস্থান গ্রহণ করবে আর দাজ্জালের অবস্থান হবে পশ্চিম দিকে।” (আল ইসাবা, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪৭৬)


এখানে মুশরিকদের দ্বারা উদ্দেশ্য ভারতীয় উপমহাদেশের মূর্তিপূজারী জাতি। এর মানে এটি হাদিস শরীফে বর্ণিত সেই যুদ্ধ, ‘গাযওয়াতুল হিন্দ’ বা ‘গাযওয়া ই হিন্দ’ যেখানে মুজাহিদরা এই উপমহাদেশে আক্রমণ চালাবে, আল্লাহ তাদেরকে বিজয় দান করবেন, ক্ষমা করে দেবেন, বেঁচে যাওয়া মুজাহিদরা জেরুসালেমে ফিরে যাবে এবং সেখানে ঈসা (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) সাক্ষাত পাবে এবং ঈসা (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) নেতৃত্বে দাজ্জালের বিরুদ্ধে মহাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২; আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯ ও ৪১০)


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) বলেছেন, “সমুদ্রের শহীদান (খ্রিস্টানদের সাথে মহাযুদ্ধে), আন্তাকিয়ার-আমাকের শহীদান (খ্রিস্টানদের সাথে মহাযুদ্ধে) ও দাজ্জালের সাথে মহাযুদ্ধের শহীদান হল মহান আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠতম শহীদ।” (আল ফিতান, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৯৩)

এসব যুদ্ধের শহীদদের সম্পর্কে এক বর্ণনায় আরও বলা হয়েছে, “উক্ত যুদ্ধে যে এক তৃতীয়াংশ লোক শহীদ হবে, তাদের এক একজন বদরি শহীদদের দশজনের সমান হবে। বদরের শহীদদের একজন সত্তরজনের জন্য সুপারিশ করবে। পক্ষান্তরে এই ভয়াবহ যুদ্ধগুলোর একজন শহীদ সাতশত ব্যক্তির সুপারিশের অধিকার লাভ করবে।” (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪১৯)


তবে মনে রাখতে হবে, এটি একটি শানগত মর্যাদা। অন্যথায় মোটের উপর বদরি শহীদদের মর্যাদা ইতিহাসের সকল শহীদের মাঝে সবচেয়ে উঁচু।

https://www.facebook.com/notes/%D8%B3%D8%A7%D8%AC%D8%AF-%D8%A7%D9%84%D8%A5%D8%B3%D9%84%D8%A7%D9%85/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%87-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9A%E0%A7%82%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%B8-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B9/540042456103269





রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর প্রতিশ্রুত “গাযওয়াতুল হিন্দ” কি অতি নিকটে???

21 April 2014 at 18:02
“গাযওয়াতুল হিন্দ” বলতে ইমাম মাহদি(আঃ) এবং ঈসা(আঃ) এর আগমনের কিছুকাল আগে অথবা সমসাময়িক সময়ে এই পাক-ভারত-বাংলাদেশে মুসলিম ও কাফিরদের মধ্যকার সংগঠিত যুদ্ধকে বুঝায়।

“গাযওয়া” অর্থ যুদ্ধ, আর “হিন্দ” বলতে এই উপমহাদেশ তথা পাক-ভারত-বাংলাদেশসহ শ্রীলঙ্কা,নেপাল,ভুটানকে বুঝায়। এবং বর্তমানে এই অঞ্চলের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আমাদেরকে সেই গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহু আ'লাম।

একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত আর তা হলো রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর প্রতিটি কথা সত্য এবং গত ১৪০০ বছরের ইতিহাস সেই সাক্ষী বহন করে চলেছে। এবং ইন শা আল্লাহ্‌ কিয়ামত পর্যন্ত সত্য হয়ে যাবেই। এটাই একজন মুসলিমের ঈমানের অন্যতম ভিত্তি যে সে রাসুলুল্লাহ(সঃ)  এর সব কথা, ভবিষ্যৎবাণীকে বিনা বাক্যে বিনা দ্বিধায় মেনে নিবে।


রাসুলুল্লাহ(সঃ) এর কথা অনুযায়ী খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্থান) থেকে কালিমাখচিত কালোপতাকাধারীদের উত্থান এবং তাদের কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া, পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে ৭ লক্ষ সেনা মোতায়েন, পাক-ভারত-বাংলাদেশের হকপন্থী ইসলামী দলগুলোর আলোচনায় উঠে আসা, পানি নিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলিমদের নির্যাতন নিয়ে ভারতের ভেতরে মুসলিমদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, সেভেন সিস্টারস তথা ভারতের ৭ টি অঙ্গরাজ্যের স্বাধীনতার দাবি নিঃসন্দেহে ভারত বিভক্তির ইঙ্গিত বহন করে।


সে সময় অবশ্যই পাক-ভারত-বাংলাদেশের মুসলিম নামধারী মুনাফিকরা আলাদা হয়ে যাবে। তারা হইতো কাফিরদের পক্ষে যোগ দিবে অথবা পালিয়ে বেড়াবে। এবং এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে মুসলিমরা জয়ী হবে এবং তারা বায়তুল মুকাদ্দাস(বর্তমান ফিলিস্তিন) এ গিয়ে ঈসা(আঃ) এর সাথে মিলিত হবে এবং খিলাফাত প্রতিষ্ঠা করবে।


হাদিস শরীফে বর্ণিত “গাজওয়াতুল হিন্দ” সম্পর্কে আসা ৫ টি হাদিসই বর্ণনা করছি। 


(১) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর প্রথম হাদিস

আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,  তিনি বলেনঃ

“আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”।

(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)


(২) হযরত সা্ওবান (রাঃ) এর হাদিস

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজাদকৃত গোলাম হযরত সা্ওবান (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’।

(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)


 (৩) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর দ্বিতীয় হাদিস

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন,

“অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম(আঃ) কে শাম দেশে(বর্তমান সিরিয়ায়) পাবে”।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,

“আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ) ! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।

বর্ণনাকারী বলেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’।

(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)


(৪) হযরত কা’ব (রাঃ) এর হাদিস

এটা হযরত কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেনঃ

“জেরুসালেমের (বাই’ত-উল-মুক্বাদ্দাস)[বর্তমান ফিলিস্তিন] একজন রাজা তার একটি সৈন্যদল হিন্দুস্তানের দিকে পাঠাবেন, যোদ্ধারা হিন্দের ভূমি ধ্বংস করে দিবে, এর অর্থ-ভান্ডার ভোগদখল করবে, তারপর রাজা এসব ধনদৌলত দিয়ে জেরুসালেম সজ্জিত করবে, দলটি হিন্দের রাজাদের জেরুসালেমের রাজার দরবারে উপস্থিত করবে, তার সৈন্যসামন্ত তার নির্দেশে পূর্ব থেকে পাশ্চাত্য পর্যন্ত সকল এলাকা বিজয় করবে, এবং হিন্দুস্তানে ততক্ষণ অবস্থান করবে যতক্ষন না দাজ্জালের ঘটনাটি ঘটে”।

(ইমাম বুখারী (রঃ) এর উস্তায নাঈম বিন হাম্মাদ (রঃ) এই হাদিসটি বর্ণনা করেন তার ‘আল ফিতান’ গ্রন্থে । এতে, সেই উধৃতিকারীর নাম উল্লেখ নাই যে কা’ব (রাঃ) থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছে)


(৫) হযরত সাফওয়ান বিন উমরু (রাঃ)

তিনি বলেন কিছু লোক তাকে বলেছেন যে রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ

“আমার উম্মাহর একদল লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, এমনকি তারা হিন্দুস্তানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ অবস্থায় পাবে। আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা সিরিয়া ফিরে যাবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে (আঃ) এর সাক্ষাত লাভ করবে”।

(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪১০)

এখানে রাসুল (সাঃ) এর বর্ণিত তৎকালীন হিন্দুস্তানের সীমারেখা বর্তমান ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে।


বর্তমানে এই উপমহাদেশের মুর্তিপুজারী ভূখণ্ডের মুসলিম প্রধান ভূখণ্ডের উপর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনের অব্যাহত প্রচেষ্টা দেখলে বুঝা যায় যে, এটি একদিন চূড়ান্ত সংঘাতময়রূপ ধারণ করবে এবং এখানকার দ্বীন ইসলামকে টিকিয়ে রাখতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভবিষ্যৎ বাণী মোতাবেক উম্মতের একটি দলকে এই দিকে অগ্রসর হতে হবে। এবং এটি ঘটবে সেই সমসাময়িক সময়ে যখন সমগ্র দুনিয়াতে ইসলামের ক্রান্তিলগ্নে ইসলামকে খিলাফতের আদলে সাজাতে আল্লাহ ইমাম মাহদিকে প্রেরণ করবেন আর যার খেলাফতের সপ্তম বছরে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং দাজ্জালের সাথে মহাযুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে ঈসা (আঃ) এর আগমন ঘটবে।

"CIA terrified of Ghazwa e Hind" শিরোনামে এই ভিডিওটি দেখলে বুঝতে পারবেন তারা কতোটা সচেতন আর আমরা কতোটা গাফেল হয়ে আছি।

http://www.youtube.com/watch?v=RqNbqfai9aE


প্রকৃত সময় এবং অবস্থা একমাত্র আল্লাহ্‌ সুবহানু তায়ালাই জানেন। আমরা কেবলমাত্র হাদিসের আলোকে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ঘটনা সম্পর্কে নিজেদেরকে সচেতন এবং প্রস্তুত করতে পারি। মহান আল্লাহ্‌ আমাদেরকে সহিহ বুঝ দান করুন,ক্ষমা করুন, মুনাফিকি থেকে হিফাজত করুন এবং তার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমিন। 

শেয়ার করুন। যেসব ভাই বোনেরা জানে না তাদেরকে জানার সুযোগ করে দিন। 

https://www.facebook.com/notes/sabet-bin-mukter/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%83-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A4-%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%85%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%87/871476542867940



At yet we claim to love our brothers!!
But not call on Muslim armed forces to respond!!
 



"কারা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত!" Banda Reza ভাইয়ের

কষ্টিপাথর দিলামঃ পরখ করে দেখুন কারা সত্যের উপর অটুট! |


www.bandareza.com/touchstone
















শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৪

গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কিত হাদিস-

গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কিত হাদিস----
******************************************
রাসুল (সা) এর আযাদকৃত গোলাম হযরত সাওবান (রা) বর্ণনা করেছেন,রাসুল (সা) বলেছেন "আমার উম্মতের দুটি দল আছে,আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন । একটি হল তারা যারা হিন্দুস্থানের সাথে যুদ্ধ করবে,আরেক দল যারা ঈসা ইবনে মারইয়ামের সঙ্গী হবে । "(নাসাঈ,খণ্ড ৬,পৃষ্ঠা ৪২)

*আবু হুরাইরা (রা) হতে বর্ণিত,রাসুল (সা) বলেছেন"অবশ্যই একটি দল হিন্দুস্থানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন,আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে|এবং আল্লাহ সেই দলের যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারইয়ামকে সিরিয়ায় (শাম) পাবে" (আল ফিতান,খণ্ড্র ১,পৃষ্ঠা ৪০৯)
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন " আমি যদি গাযওয়াতুল হিন্দে অংশ গ্রহনের সু্যোগ পাই, তবে আমি আমার নতুন পুরাতন সকল সম্পদ বিক্রি করে দিব, এবং এতে অংশ গ্রহন করব, এরপর আল্লাহ আমাদের বিজয় দান করবেন এবং আমরা যখন সামে ফিরে যাব তখন আমি হব একজন নিশ্চিত (জাহান্নামের আগুন হতে) স্বাধীন আবু হুরায়রা এবং সেখানে (সামে) আমরা ঈসা (আঃ) এর সাথে মিলিত হব।
(মুসনাদে ইসহাক, হাদীস নংঃ৪৭৭)

ছাওবান (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূল (সঃ) বলেছেন " উম্মাতের দুটি দলকে আল্লাহ জাহান্নামের আগুন থেকে হেফাজত করবেন একটি দল যারা হিন্দে যূদ্ধ করবে এবং এর একটি দল যারা ঈসা (আঃ) এর পক্ষে যুদ্ধ করবে। " ( মুসনাদে আহমদঃ ২২৪৪৯, সুনানে নাসাঈঃ ৩১৭৫ )
এখানে রাসুল (সা) এর বর্ণিত তৎকালীন হিন্দুস্থানের সীমারেখা বর্তমান (ভারত,নেপাল,শ্রীলংকা,বাংলাদেশ ও পাকিস্থান নিয়ে) |
মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করি তিনি যেন আমাদের এই বরকতময় সময়ে বেচে থাকার ও গাযওয়াতুল হিন্দ বা হিন্দুস্তানের চূড়ান্ত যুদ্ধে অংশ গ্রহন করার তৌফিক দান করেন । আমীন।




শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৪

আরব ইসরাঈল যুদ্ধ ১৯৭৩

১৯৭৩ সাল। আরব ইসরাঈল যুদ্ধ চলছে।
এ যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহেই ইসরাঈল ৫০০ ট্যাংক, ৫০টা এয়ার ক্রাফট হারায়। ৩ সপ্তাহে ইসরাঈলের ২৬০০ সৈন্য মারা যায়। মিশর, ইসরাঈলের ২৩০ জন সৈন্যকে আটক করেছিল। যার কারণে ইসরাঈলে ব্যাপক বিক্ষোভ সংঘটিত হয়।
সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও অক্টোবরের ২২ তারিখে আনোয়ার সাদাতের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সবাইকে হতবাক করে।

এ যুদ্ধের পরিকল্পনাকারী ছিলেন, মিশরীয় সেনা অফিসার জেনারেল সাদ আল শাযলী। আনোয়ার সাদাত তাকে হটিয়ে দিয়ে কর্তৃত্ব নিজে নেয়।
প্রশ্ন হচ্ছে জেনারেল সাদ কেন এই বীরত্ব দেখিয়েছিলেন???
আল জাযিরার সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, "আমি এর প্রতিদান আল্লাহর কাছে চাই।"
মুসলিম সেনাবাহিনীর এরকম অসংখ্য অফিসার আল্লাহর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু মুসলিম উম্মাহ কর্তৃক তাদের কাছে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় নুসরাহ চাওয়ার দাবি যত জোরালো হচ্ছে, কুফর কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পরিমাণও বাড়ছে। বাংলাদেশের এক ঊর্ধতন সেনা অফিসার আয়োজিত এক পার্টিতে তার অধস্তন অফিসারদেরকে দাওয়াত দেয়া হয়। সেখানে মদ পরিবেশন করা হয়, এবং খুব সুক্ষভাবে লক্ষ্য রাখা হয় কারা মদ নেয়নি, এবং কারা সালাত আদায় করতে গেছে।

আর এভাবেই কুফর চিহ্নিত করছে ঈমানদার নিষ্ঠাবান অফিসারদেরকে, এবং তাদেরকে জেলে ভরছে, গুম করছে নয়ত চাকরি থেকে বরখাস্ত করছে। নেভির এক অফিসার জাতিসংঘ মিশনে যাওয়ার প্রস্তাবে একে হারাম উল্লেখ করায় তার চাকরি চলে যায়। পাকিস্তানের ব্রিগেডিয়ার আলী এ জন্য জেল খাটছেন যে তিনি লাদেন হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন।
হে মুসলিম সেনাবাহিনী!

তোমরা হাসিনা খালেদাকে ভয় করনা, অশ্লীল বাক্যই যাদের রাজনৈতিক ভাষা। এই উম্মাহ তোমাদের সাথে আছে। এই উম্মাহর নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদরা তোমাদের সাথে আছে। আল্লাহকে ভয় কর, খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার জন্য একবার ব্যারাক ছেড়ে বের হও। ট্যাংকের নল জালেম হাসিনা-খালেদাদের দিকে তাক করো।
ইনশাআল্লাহ, সারা পৃথীবির মুসলিম দেশগুলোয় হাজার হাজার উম্মাহকে নিয়ে তোমাদের সমর্থনে মার্চ করার ক্ষমতা হিযবুত তাহরীরের আছে। এই উম্মাহ খিলাফতের বোঝা বহন করার জন্য পিঠ পেতে দিতে প্রস্তুত আছে।
তোমরা আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যকারী হয়ে যাও, আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।
কল্পনা কর, যখন তোমরা নুসরাহ দিবে, বায়াত দিবে খলীফাকে, তোমরাই হবে আল্লাহর রাসূলের হাদীস, "আবার আসবে নবুয়তের আদলে খিলাফত" বাস্তবায়নকারী সেই আনসার।
তোমরা ইতিহাসকে দ্বিতীয়বার লিখবে। তোমরা একটা ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হবে, সেই সাথে হাজার হাজার ফেরেস্তারা এই ঘটনার সাক্ষী হবে।..... আর সাক্ষী হিসেবে তো আল্লাহই যথেষ্ট।

তখন তোমাদের মেরুদন্ড বেয়ে শীতল স্রোত প্রবাহিত হবে, আল্লাহর ভয়ে, আবেগে তোমাদের গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে, এবং তোমরা সেজদায় পড়ে যাবে। তোমাদের জন্য আসমানে আসমানবাসীরা আর যমীনে যমীনবাসীরা দোওয়া করবে।
বের হয়ে আস, ব্যারাক থেকে, চেইন অফ কমান্ড ছিন্ন করে, শুধুই আল্লাহর জন্য...






উমার মুখতার: মরু সিংহ


মরু সিংহ উমার মুখতার:
এক অপরাজেয় জীবনের গল্প,,,,

১৮৬২ সাল। উসমানীয় খিলাফতের অধীনস্ত আফ্রিকার একটি ছোট শহরের এক দরিদ্র পরিবারে নতুন একটি শিশুর জন্ম হয়। ১৬ বছর বয়সে ছেলেটির বাবা মারা গেলে শহরের একজন শিক্ষক তাকে নিজের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসেন।

এই সময়ই ধীরে ধীরে তিনি এমন একটি জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন যে, রাতে মাত্র ৩ ঘণ্টা ঘুমাতেন। রাতের শেষ ভাগে উঠে প্রভুর সান্নিধ্যে সালাতে দাঁড়াতেন। ফজরের পূর্বের বাকি সময়টুকু কাটিয়ে দিতেন কুরআন তিলাওয়াতে। এ সময় তিনি কুরআন হিফজ সম্পন্ন করে ফেলেন। প্রতি সাতদিনে একবার সম্পূর্ণ কুরআন পড়ে শেষ করতেন। পরবর্তী জীবনের শত বাধা-বিপত্তির মাঝেও এই অভ্যাস তিনি ত্যাগ করেননি।

অল্প বয়সেই তার সাহস আর প্রজ্ঞার সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের কাছেই তিনি হয়ে ওঠেন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বে। এক কাফেলার সাথে সুদান যাওয়ার পথে একটি ঘটনায় তার সাহসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। যাত্রাপথের একটি সরু রাস্তা রোধ করে একটি বিরাট সিংহ দাঁড়িয়েছিল। কাফেলার সবাই আতংকিত হয়ে ছুটোছুটি করতে থাকে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে সকলেই। অবশেষে সবাই মিলে ঠিক করলো যে, সিংহটিকে একটি উট দেয়া হবে; যাতে উটটি নিয়ে সে তাদের পথ ছেড়ে চলে যায়। এই অবস্থায় তিনিই তার করণীয় ঠিক করে নেন। তিনি তার শট গানটি নিয়ে ঘোড়ার উপর চড়ে বসলেন এবং সিংহটির দিকে এগিয়ে গেলেন। সবার চোখ কপালে উঠে গেল, কিছুক্ষণ পর তিনি সিংহটির মাথা নিয়ে ফিরে এলেন! তার সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে লোকেরা তাকে উপাধি দেয় “সিয়েরানিকার সিংহ”।

তার চরিত্র গঠনে সাহস এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। তার চরিত্রের এই বৈশিষ্ট্য শুধু তার নিজের গোত্র, দেশ আর মানুষেরই নয়; বরং ঔপনিবেশিক পরবর্তী যুগে সারা পৃথিবীর মুসলিমদের ভাগ্য পরিবর্তনে অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে ওঠে।

মাত্র বিশ বছর বয়সেই তিনি বেশ বিচক্ষণ ও পরিপক্ক হয়ে ওঠেন। ফলে এই বয়সেই গোত্রের নানা সমস্যা সমাধানে তার ডাক পড়তো। লোকেরা তার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতো এবং গ্রামের অভ্যন্তরীণ সমস্যাই হোক কিংবা ধর্মীয়, তার পরামর্শ সবাই সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিতো। তার শিষ্টাচার ছিল সুবিদিত। তার ভাষার প্রাঞ্জলতা সহজেই সবার মনোযোগ কেড়ে নিতো। এই বৈশিষ্টগুলোই পরবর্তীতে ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে গোত্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে তাকে সাহায্য করেছিল।

তার বয়স যখন ত্রিশের কোঠা অতিক্রম করছে, তখনই পৃথিবীজুড়ে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর ঔপনিবেশিকতার রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। একের পর এক দেশ যখন ইউরোপিয়ানদের হাতে বেদখল হচ্ছিলো, তিনি তার এলাকায় ইসলামের ঝাণ্ডা উঁচিয়ে রাখেন। ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। বনু সানুস গোত্রের সাথে জোট বেঁধে তিনি প্রথমে ফ্রেঞ্চ এবং পরে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। কারণ তারা এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছিল।

ইউরোপিয়ানদের দৃষ্টিতে অনুন্নত জাতিগুলোকে নিজেদের উপনিবেশে পরিণত করার এই প্রতিযোগিতায় ইতালিও যোগ দেয়। উত্তর আফ্রিকায় তার অভিযান শুরু করে। কিন্তু লিবিয়া দখলের যাত্রাপথেই পঞ্চাশ বছর বয়স্ক এই মানুষটি তাদের সামনে পাহাড়ের মত বাধা হয়ে দাঁড়ান।

সংঘর্ষ এড়াতে ইতালিয়ানরা তাকে উচ্চ পদ এবং সম্পদের লোভ দেখায়। বিনিময়ে তাকে আত্মসমর্পণ করে তাদের আনুগত্য মেনে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। এর জবাবে তিনি তার বিখ্যাত উক্তিটি করেন, “আমি কোন মজাদার খাবার নই যে, কেউ চাইলেই আমাকে গিলে ফেলবে। তারা আমার আদর্শ-বিশ্বাসকে টলাতে যতই অপচেষ্টা করুক, আল্লাহ তাদের পরাজিত করেই ছাড়বেন।”

তারা হাল ছেড়ে দিয়ে ফিরে যায়। পরবর্তী অভিযানের শুরুতে তাকে আবার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তিনি যদি তার এলাকা ছেড়ে তাদের কাছে চলে আসেন, তাহলে তিনি অর্থ-বিত্ত সহ বিলাসী জীবন যাপনের সকল সুবিধা পাবেন। কিন্তু তিনি আবার এই বলে প্রত্যাখ্যান করেন, “কখনোই না, আমার প্রভুর সাথে মিলিত হওয়ার আগে আমি কিছুতেই এই মাটি ত্যাগ করবো না। আমার কাছে মৃত্যুর চেয়ে প্রিয় আর কিছুই নেই। আমি তো প্রতি মূহুর্তেই তার জন্য অপেক্ষা করে আছি।”

বয়সের ভার তাকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সত্তরোর্ধ এই মানুষটিই ছিলেন তার দেশের মানুষের আশার কেন্দ্রস্থল। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সমৃদ্ধ হাজার হাজার সৈন্য আর যুদ্ধবিমানের বিপরীতে তার ছিল কয়েকটি ঘোড়া, সাধারণ রাইফেলধারী কিছু লোক, যারা পাহাড়ে পাহাড়ে উপোস ঘুরে বেড়াচ্ছিল। উম্মাহর অন্যান্য সাহসী সেনাপতিদের মতোই, তার শক্ত অবস্থান আর তেজোদ্দীপ্ত কথায় লোকেরা তার পাশে জড়ো হতে থাকে। তিনি ইতালিয়ানদের দূর্বল জায়গাগুলো খুঁজে বের করে তাতে আঘাত হানতে শুরু করেন। যারা ভেবেছিল, মুসলিম দেশগুলো দখল করতে কোন বেগই পেতে হবে না, তারা এবার প্রচণ্ড ধাক্কা খেল।

জালু মরুভূমি থেকে আসা আবু কারায়্যিম নামের আরেকজন সাহসী মানুষকেও তিনি এই লড়াইয়ে পাশে পেয়েছিলেন। তার বয়স হয়েছিল নব্বই বছর! কিন্তু ক্ষুধা আর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তার বাহিনীর অনেকের মৃত্যু ঘটে। ইতালিয়ানরা একের পর এক গ্রাম লুট করে জ্বালিয়ে দিতে থাকে। নারী, শিশু আর বৃদ্ধদেরও তারা ছাড় দেয়া হয়নি। কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে বন্দির সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে।

ফেঞ্চদের বিরুদ্ধে একত্রে লড়াই করা সানুসিদের নেতা মুহাম্মাদ আল-জাওয়াই তাকে মিশরে চলে আসার আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু তিনি পরাজয় নিশ্চিত জেনেও শত্রুর ভয়ে পালিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান।

কেন তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি শুধুমাত্র ইসলামের জন্য যুদ্ধ করছেন। কাফিরদের দখলদারিত্ব থেকে মুসলিম ভূমি রক্ষা করাকে তিনি ফরজ মনে করতেন। আল্লাহর শত্রুদের সাথে তিনি কোন ধরনের আপোষ করতে অস্বীকৃতি জানান।

দীর্ঘ যুদ্ধের পর অবশেষে শত্রুরা তাকে আহত অবস্থায় বন্দি করতে সক্ষম হয়। বেঁচে থাকা শুধুমাত্র একজন সহযোগী নিয়েও তিনি যুদ্ধ চালাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার ঘোড়াকে গুলি করে মেরে তাকে নামানো হয়। তাকে শিকলবন্দি অবস্থায় সুলুখ শহরে ইতালিয়ানদের সামরিক কেন্দ্রে আনা হয়।

মুসলিম ভূমিকে শত্রুর দখলদারিত্ব থেকে রক্ষা করতে প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের উপর তিনি জিহাদ ফরজ মনে করতেন। তার বিশ্বাস, সাহসিকতা এবং অকুতোভয় মানসিকতার কারণে শত্রুরাও তাকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখতো।

যে অফিসার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলো সে বলে, “তাকে যখন আমার অফিসে হাজির করা হয়, তাকে অন্য সব মরুযোদ্ধাদের মতোই ভেবেছিলাম। তার হাত ছিলো শিকলবদ্ধ। অবিরাম যুদ্ধ করতে করতে তার শরীরের অনেক হাড়গোড়ই ভেঙ্গে গিয়েছিল। একারণে তার হাঁটতেও খুব কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু এত কিছুর পরও তাকে কোন সাধারণ সৈনিকের মত লাগছিলো না। তিনি সোজা হয়ে দাঁড়ালেন এবং ধীর শান্ত কণ্ঠে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। তার চেহারায় সূর্যের মত দ্যুতি আমার মনে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। কথোপকথনের শেষ ভাগে আমার ঠোঁট কাঁপতে শুরু করে। আমি তাড়াতাড়ি জেরা শেষ করে তাকে পরের দিন কোর্টে হাজির করার নির্দেশ দিই।”

তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তী। তার দেশের শাসকরা যখন ইতালিয়ানদের কাছে আত্মসমর্পণ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলো, তিনি তার ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সানুসী গোত্রের অনেক আলিমরা একটা সময় পর্যন্ত যুদ্ধ করলেও এক সময় এসে তাদের অধিকাংশই সামান্য সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে আপোষ করে ফেলে। এমনকি বিপদের সময় তারা তার পাশে এসে দাঁড়ায়নি। বরং তারা ইতালিয়ানদের হাতে মুসলিম ভূমিকে ছেড়ে দিয়েছিল।

পক্ষান্তরে তিনি আল্লাহর কুরআন হাতে তুলে নেন এবং আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেন যে, প্রয়োজন হলে তিনি একাই জালিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন, যতক্ষণ বিজয় কিংবা শাহাদাতের যে কোনো একটি লাভ না করেন। তার জীবনের শেষ বিশ বছরে তিনি এক হাজারেরও বেশি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

ইতালিয়ান জেনারেলরা তাকে শেষ বারের মত নতি স্বীকার করার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু তার জবাব ছিল, “যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমরা এই দেশ ত্যাগ করবে অথবা আমি আমার দেহ ত্যাগ করবো, ততক্ষণ আমি লড়াই চালিয়ে যাবো। মানুষের অন্তরের গোপন কথাও যার অগোচরে নয় তার শপথ, যদি এই মূহুর্তে আমার দুই হাত বাঁধা না থাকতো আমি খালি হাতেই তোমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তাম... ...।”

কথা শেষ হওয়ার আগেই জেনারেলরা সাজানো ট্রাইব্যুনালে তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে। এমনকি বিচার শুরু হওয়ার আগে থেকেই কোর্টের বাইরে ফাঁসির দড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছিল!

১৯৩১ সালে জনসম্মুখে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ইতালিয়ানরা এর মাধ্যমে মুসলিমদের ভয় দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সে সাধ পূরণ হয়নি। তার মৃত্যু পুরো মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং উত্তর আফ্রিকায় একের পর এক নতুন বিদ্রোহের সূচনা হয়।

আল্লাহ যেন জান্নাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।

ইতালিয়ানরা শিকলবদ্ধ অবস্থায় তার চারপাশে দাঁড়িয়ে জেনারেলদের ছবি তুলে আত্মতৃপ্তির হাসি হেসেছিল। কিন্তু তারা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল যে, তার ঐ হাতের শিকল আর ফাঁসির দড়ি প্রতিটি নিষ্ঠাবান মুসলিমের জন্য ঈর্ষার বস্তু।

এই মহান মানুষটি আর কেউ নন, তার নাম উমার আল-মুখতার। তার রেখে যাওয়া আদর্শ কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকবে ইন শা আল্লাহ। তিনি নিজের রক্ত দিয়ে বিজয়ের গল্প লিখে গিয়েছেন, তিনি কিংবদন্তীদের কিংবদন্তী এবং যারা অবমাননাকর সময়ে মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায় তাদের জন্য একজন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।

তার সময়কার মর্ডানিস্ট এবং বিশ্বাসঘাতক আলিমদের কাউকেই কারাগারে যেতে হয়নি কিংবা ফাঁসিতে ঝুলতে হয়নি। তারা সাধারণভাবেই, হয়তো ইতালিয়ানদের নিরাপত্তায় সম্পদ আর বিলাসিতার মাঝেই মৃত্যু বরণ করেছিল। কিন্তু তাদের নাম তাদের মৃত্যুর সাথে সাথেই মুছে গিয়েছে। মুসলিমদের উপর দখলদারিত্বে যারা কাফিরদের সাহায্য করে, জাহান্নামই তাদের একমাত্র ঠিকানা। উমার আল-মুখতার যতদিন বেঁচে ছিলেন, তাকে হয়তো যুদ্ধ করতে হয়েছে। তাকে শিকলবন্দি, কারারুদ্ধ এবং অবশেষে ফাঁসিতে ঝুলতে হয়েছে। কিন্তু তার নাম এখনো বেঁচে আছে এবং জান্নাতই তার মতো শহীদদের ইন শা আল্লাহ চিরস্থায়ী আবাসস্থল।

উমার আল-মুখতার তার নিয়্যাত এবং কাজ অনুযায়ী আল্লাহর কাছে তার প্রাপ্য পুরস্কার পাবেন। তিনি শহীদ হতে চেয়েছিলেন এবং তার ইচ্ছা আল্লাহ পূরণ করেছেন ইন শা আল্লাহ।

ইমরান হেলাল

[শাইখ আহমাদ জিবরীলের লেখা থেকে অনূদিত]





কারা এই সব বিদ্রোহী ?

পলাশীর যুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পিত পরাজয়ই হচ্ছে মুসলিম সাম্রাজ্যের জীবন্ত সমাধি সাধন।

ভারতে অন্তত মুসলিম জনসাধারণ মাটি ফুঁড়ে মাথা উঁচু করে উঠতে চেষ্টা করেছে বারবার। কিন্তু সহযোগিতার অভাবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। মাত্র কয়েক যুগ আগের “ ফকির বিদ্রোহ ” হয়েছিল। হয়েছিল “ খিলাফত মুভমেনট ” । কিন্তু কোন বিদ্রোহই তাদের লক্ষ্যতে আঘাত আনতে পারেনি। কারন হিসেবে বলা যেতে পারে, যথাযথ নেতৃত্ব ও বিদ্রহের পদ্ধতিগত দুর্বলতা।

কিন্তু কারা সেই ফকির ? কারা সেই দরবেশ ? কারা সে তাপস সম্প্রদায় ?
আজ ইতিহাসে “ফকির বিদ্রোহ ” , “ মোপাল বিদ্রোহ ”, “ খিলাফাত বিদ্রোহ ” প্রভৃতি ইংরেজদের তথা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এই সকল বিরাট বিরাট অভ্যুত্থানে ঐতিহাসিক সত্য , তবু তা চাপা পড়ে গেছে কিসের কারনে ?

কারা এই সব বিদ্রোহী ?

বলাবাহুল্য, এরা হচ্ছেন তারাই , যারা হচ্ছেন , মুসলিম মুবাল্লিগ, মউলোভী , মহাজেদ, আর মোল্লার দল । তাঁরাই হচ্ছেন , এই সকল বিদ্রোহ তথা গনঅভ্যুত্থানের নায়ক ও ধারক।

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ্‌ভক্ত ও ফকির তাপসের দল যখনই কোন অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, জুলুম ও অধর্মের প্রতি আঘাতে বিশ্বশান্তি বিপর্যস্ত হয়েছে এবং হতে দেখেছেন , ঠিক তখনই তাঁরা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। প্রয়োজনে জালিম শাসকদের দ্বারা কারাবরন করেছেন। প্রান দিয়েছেন অকাতরে।
তাই দেখা যায় , তাঁরা লড়েছেন আকবর ও জাহাঙ্গীর এর বিরুদ্ধে আবার কখন ও শিখদের বিরুদ্ধে, আবার কখন ও ইংরেজ ও ইংরেজদের দালালদের বিরুদ্ধে।

আজকে কোথায় সেই ফকির ? কারা সেই দরবেশ ? কারা সে তাপস সম্প্রদায় ? যখন সারা বাংলাদেশে ঠিক তাদের উপরেই যালিম শাসকরা তাদের উপর আঘাত আনে ? তাঁরা কি হাসিনা, খালেদা কে আল্লাহ্‌ থেকে বেশি ভয় করে? নাকি তাদের পূর্বপুরুষদের তাঁরা অস্বীকার করতে চায় ?

এরূপ দৃঢ়চেতা সংগ্রামী মনীষীদের ইতিহাসে সামান্য না লিখলে সত্যের অপমান করা হয় । ইতিহাস যেন অসমাপ্ত হয়ে যায়।

কিছু ভাই আছেন যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শরীয়তের যেকোন বিষয়ের ভুল/সঠিক নির্ধারণ করেন নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের উক্ত বিষয়ের মাস্টারডিগ্রি বা পি.এইচ.ডি সার্টিফিকেট দিয়ে। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে শরীয়তের যে কোন বিষয়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটধারীরাই একমাত্র অথরাইজড ডিলার এন্ড ডিস্ট্রিবিউটার... আর বাদ বাকি সবাই ধইঞ্চা !!!

সার্টিফিকেটের ভারে ন্যূজ হাইলি কোয়ালিফাইড এই ভাইয়েরা অপর ভাইকে ইসলাহা বা ভুল ধরিয়ে সংশোধন করে দেয়ার নামে যা করছেন তা মূলতঃ উক্ত ভাইয়ের ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে বিগত চৌদ্দশত বছরের তার কৃত ভুল-ত্রুটি পাবলিসিটির একটা আনুষ্ঠানিক হালখাতা মাত্র!!! অর্থাৎ একজন দীনী ভাইকে খোঁচা দেয়ার যত অ্যাঙ্গেল আছে, হেয় প্রতিপন্ন করার যত ডাইমেনশন আছে আর নানাবিধ মানবীয় দুর্বলতাসহ ভুলত্রুটি পাবলিসিটি করার যত উপায় ও কৌশল আছে সব অবলম্বন করে মোটামুটি ঝাল মিটানো শেষ হবার পরে মিষ্টি হেসে বলবেন- "ইসলাহার উদ্দেশেই এতকিছু বললাম, কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা বা এমন কোন উদ্দেশ্যে নয়..."

নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ডজন ডজন সার্টিফিকেট, উচ্চ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী উইথ দীর্ঘ কয়েক যুগের সাধনা/অভিজ্ঞতাকে যারা সিরাতুল মুস্তাকিমের জন্য অলঙ্ঘনীয় মানদণ্ড নির্ধারণ করার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন সেসকল ভাইদের জন্য আফসোস উইথ দোয়া!!!








জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাইদের কাছে প্রশ্নঃ


জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাইদের কাছে প্রশ্নঃ
আপনারা কি মনে করেন, ইসলামী শরীয়াতের বিধানকে বাতিল করে এই দেশে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ব্রিটিশ আইন চালু করার মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার সরকারগুলো প্রকাশ্য কুফরীতে লিপ্ত?
(ক) যদি আপনারা মনে করেন, এরা সুষ্পষ্ট কুফরীতে লিপ্ত, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও ক্বিতাল করে, তাদেরকে হটিয়ে ইসলামী সরকার আনয়নের চেষ্টা করতে আপনারা ইসলামী শরীয়াত অনুযায়ী বাধ্য। উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেনঃ
دَعَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَايَعْنَاهُ فَكَانَ فِيمَا أَخَذَ عَلَيْنَا أَنْ بَايَعَنَا عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي مَنْشَطِنَا وَمَكْرَهِنَا وَعُسْرِنَا وَيُسْرِنَا وَأَثَرَةٍ عَلَيْنَا وَأَنْ لَا نُنَازِعَ الْأَمْرَ أَهْلَهُ قَالَ إِلَّا أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا عِنْدَكُمْ مِنْ اللَّهِ فِيهِ بُرْهَانٌ
অর্থাৎ, “রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ডাকলেন এবং আমরা তাকে বাইয়াত দিলাম। তিনি তখন আমাদের থেকে যে বাইয়াত নেন, তার মধ্যে ছিল – ‘আমরা শুনবো ও মানবো, আমাদের অনুরাগে ও বিরাগে, আমাদের সংকটে ও স্বাচ্ছন্দ্যে এবং আমাদের উপর অন্যকে প্রাধান্য দিলেও যোগ্য ব্যক্তির সাথে আমরা নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল করবো না।’ তিনি বলেন, যতক্ষণ না তোমরা তার মধ্যে প্রকাশ্য কুফরী দেখতে পাবে এবং তোমাদের কাছে এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দলীল থাকবে।’” (মুত্তাফাকুন আলাইহি)

উম্মাহর ইমামগণের মধ্যে এবং আমাদের মাজহাবে এই ব্যাপারে ইজমা রয়েছে যে, কোন মুসলিম এলাকার শাসকের মধ্যে এই রকম সুষ্পষ্ট কুফরী বা কুফরুন বাওয়াহ দেখা যায়, তাহলে তার সাথে সশস্ত্র জিহাদ-ক্বিতাল করে, তাকে হটিয়ে ইসলামী শরীয়াত জারি করা হচ্ছে ঐ এলাকার সামর্থ্যবানদের উপর ফরজে আইন। আর সেই শাসকের সমর্থনে যদি কোন বাহিনী থাকে তবে ঐ মুরতাদ বাহিনীসহ ঐ শাসককে হটানো হচ্ছে ফরজে আইন। এ ব্যাপারে ইজমা উল্লেখ করে ইমাম নববী (রঃ) বলেছেন,
قال القاضي عياض أجمع العلماء على أن الإمامة لا تنعقد لكافر وعلى أنه لو طرأ عليه الكفر انعزل قال وكذا لو ترك إقامة الصلوات والدعاء إليها قال وكذلك عند جمهورهم البدعة قال وقال بعض البصريين تنعقد له وتستدام له لأنه متأول قال القاضي فلو طرأ عليه كفر وتغيير للشرع أو بدعة خرج عن حكم الولاية وسقطت طاعته ووجب على المسلمين القيام عليه وخلعه ونصب أمام عادل أن أمكنهم ذلك فإن لم يقع ذلك الا لطائفة وجب عليهم القيام بخلع الكافر ولا يجب في المبتدع إلا إذا ظنوا القدرة عليه فإن تحققوا العجز لم يجب القيام وليهاجر المسلم عن أرضه إلى غيرها ويفر بدينه
“কাযী ইয়াজ (রঃ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলেমদের ইজমা রয়েছে যে, কাফিরের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যাবে না; সুতরাং তার থেকে যদি কুফরী প্রকাশ পায়, তাহলে তাকে অপসারণ করতে হবে।’” ......... কাযী ইয়াজ (রঃ) আরো বলেন, “সুতরাং তার থেকে কোন কুফরী বা শরীয়াহ পরিবর্তন বা বিদয়াত প্রকাশ পেলে, সে তার দায়িত্ব থেকে খারিজ হয়ে গেল এবং তার আনুগত্যের অধিকার সে হারালো; আর এ অবস্থায় মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব যে, তারা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, তাকে অপসারণ করবে এবং একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক নিয়োগ করবে যদি তাদের পক্ষে সম্ভব হয়। আর যদি একদল মানুষ ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এটি সম্ভব না হয় তবে ঐ দলটিকে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং ঐ কাফিরকে অপসারণ করতে হবে। তবে বিদ’আতীর ক্ষেত্রে এটি আবশ্যক নয় যদি না তারা মনে করে যে তারা এটি করতে সক্ষম। অর্থাৎ যদি সত্যিই অক্ষমতা বিরাজ করে তাহলে বিদ্রোহ করা আবশ্যক নয়, তবে মুসলমানদেরকে ঐ এলাকা থেকে অন্য কোথাও তাদের দ্বীন নিয়ে হিজরত করতে হবে।” (সহীহ মুসলিম বি শারহুন নববী, কিতাবুল ইমারাহ ১২/২২৮)

মুওয়াত্বায়ে মালেকের প্রসিদ্ধ শরাহ আত-তামহীদ এর মধ্যে ইবনে আবদীল বার (রহ.) বলেন:
فإنّ من ردّ ، وامتنع عن قبول حكم الله - تعالى - فهو كافر بالإجماع ، وإن كان مقرّاً بهذا الحكم ، "يقول إسحاق بن راهويه : وقد أجمع العلماء أن على من دفع شيئاً أنزله الله .. وهو مع ذلك مقر بما أنزل الله أنه كافر)التمهيد باختصار (4/226
যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান মেনে নেয়া থেকে বিরত থাকে ও তা প্রত্যাখ্যান করে, সে সর্ব সম্মতিক্রমে কাফের হয়ে যায়। যদিও সে এই বিধানকে স্বীকার করে। ইসহাক বিন রাহবিয়া বলেন: সকল আলেমগণ এই ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর অবর্তীন কোন একটি বিধানকেও প্রত্যাখ্যান করে নিশ্চিতভাবে কাফের হয়ে যায়। যদিও সে সেটাকে আল্লাহর অবর্তীণ বিধান বলে স্বীকার করে। (আত তাহমিদ: ৪/২২৬)

আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রঃ) বলেছেনঃ
وقال الداودي الذي عليه العلماء في أمراء الجور أنه إن قدر على خلعه بغير فتنة ولا ظلم وجب وإلا فالواجب الصبر وعن بعضهم لا يجوز عقد الولاية لفاسق ابتداء فإن أحدث جورا بعد أن كان عدلا اختلفوا في جواز الخروج عليه والصحيح المنع إلا أن يكفر فيجب الخروج عليه
দাউদী (রঃ) বলেছেন, আলেমরা এ ব্যাপারে একমত যে, শাসক জালেম হলে যদি সামর্থ্য থাকে ফিতনা ও জুলুম ছাড়া তাকে অপসারণ করার তাহলে তা ওয়াজিব। তা না হলে ধৈর্য্য ধরা ওয়াজিব। অন্যরা বলেছেন, ফাসিক ও বিদয়াতীর কাছে নেতৃত্ব দেয়া যাবে না। যদি সে প্রথমে ন্যায়পরায়ণ থাকে এবং পরে বিদয়াত ও জুলুম করে তবে তার অপসারণ ও বিরুদ্ধাচারণের ব্যাপারে মতভেদ হয়েছে। সঠিক মত হচ্ছে, তা না করা যতক্ষণ না সে কুফরী করে। কুফরী করলে তাকে অপসারণ ও তার বিরুদ্ধাচারণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। (উমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহুল বুখারী, কিতাবুল ফিতান, ৩০/১১০)

একই ইজমা ইবনে হাজার (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেনঃ এ ব্যাপারে ইবনে বাত্তাল (রঃ), ইবনে তীন (রঃ), দাউদী (রঃ) প্রমুখও ইজমা উল্লেখ করেছেন। ইবনে হাজার (রঃ) বলেন,
وملخصه أنه ينعزل بالكفر إجماعا " فيجب على كل مسلم القيام في ذلك، فمن قوي على ذلك فله الثواب، ومن داهن فعليه الإثم، ومن عجز وجبت عليه الهجرة من تلك الأرض
“আর এ ব্যাপারে ইজমার সারমর্ম হলো তাকে তার কুফরীর কারণে অপসারণ করতে হবে। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানকে এই উদ্দেশ্যে রুখে দাঁড়াতে হবে, যার এই কাজ করার শক্তি আছে তার জন্য রয়েছে সওয়াব, যে এটা অবহেলা করবে সে গুনাহগার হবে, আর যে এতে অসমর্থ তার জন্য ওয়াজিব হবে ঐ এলাকা থেকে হিজরত করা।” (ফাতহুল বারী, কিতাবুল ফিতান, ১৩/১২৩)

(খ) যদি আপনারা মনে করেনঃ
তারা কুফরীতে লিপ্ত নয়, তাহলে তারা আপনাদের উপর বৈধ মুসলমান শাসক।
তাদেরকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করা, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা, বিদ্রোহ করা আপনাদের জন্য হারাম।
বরং তাদের বিভিন্ন অন্যায়-অত্যাচারে আপনাদেরকে ধৈর্য্য ধরতে হবে।
যেমনটি রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلَيْكَ السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ في عُسْرِكَ وَيُسْرِكَ، وَمَنْشَطِكَ وَمَكْرَهِكَ، وَأثَرَةٍ عَلَيْكَ - رواه مسلم
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমার প্রতি দুঃখে-সুখে, হর্ষে-বিষাদে এবং তোমার উপর অন্যদেরকে প্রাধান্য দেওয়ার সময়ে (শাসকের) কথা শোনা ও (তার) আনুগত্য করা ফরজ”। (বুখারি, নাসায়ি, আহমদ)

ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সালামা ইবনে ইয়াযীদ আল-জুফী (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর নবী! আমাদের উপর যদি এরূপ শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাশীন হয় যারা তাদের অধিকার আমাদের নিকট থেকে পুরোপুরি আদায় করে নেয়, কিন্তু আমাদের প্রাপ্য অধিকার দেয় না, তখন আমাদের জন্য আপনার নির্দেশ কি? রাসূলুল্লাহ (সা) তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। সালামা পুনরায় জিজ্ঞেস করলে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ তোমরা শ্রবণ করবে ও আনুগত্য করে যাবে। কারণ তাদের (পাপের) বোঝা তাদের উপর, তোমাদের বোঝা তোমাদের উপর। (মুসলিম)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা অধিকার হরণ ও বহু অপছন্দনীয় জিনিসের সম্মুখীন হবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে তার জন্য আপনার নির্দেশ কি? তিনি বলেনঃ এরূপ অবস্থায় তোমরা তোমাদের নিকট প্রাপ্য যথারীতি পরিশোধ করবে এবং তোমাদের প্রাপ্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করবে। (বুখারী, মুসলিম)
হুজাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি লম্বা হাদিসে এসেছে, রাসুল (সাঃ) বলেছেন,
“একসময় এমন শাসক হবে, যারা আমার দেখানো হেদায়াতের পথ অনুসরণ করবে না, আমার সুন্নাহও অনুসরণ করবে না। তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি হবেঃ যাদের অন্তর হবে শয়তানের, কিন্তু শরীরটা মানুষের। তিনি (হুজাইফা রাঃ) বললেন, আমি এই অবস্থায় পতিত হলে কি করবো, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)? তিনি বললেন, তুমি শাসকের শ্রবণ ও আনুগত্য করতে থাকবে। যদিও সে তোমাদের পিঠে চাবুক মারে ও তোমাদের ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নেয়, তবুও তোমরা তার শ্রবণ ও আনুগত্য করবে”। (সহীহ মুসলিম, ৪৫৫৪)

ইমাম তাহাবী (রঃ) তাঁর আক্বিদার সংকলনে উল্লেখ করেছেন, “এবং আমরা (আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ) আমাদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও যুদ্ধে বিশ্বাস করি না, যদিও তারা জুলুম করে”।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেন, “এটা আহলে সুন্নাহর একটা প্রসিদ্ধ আক্বিদা এই যে, শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও তলোয়ার দিয়ে যুদ্ধ করা হালাল নয় যদিও তারা জুলুম করে”। (মিনহাজ আল সুন্নাহ ৩/৩৯০)
হে ভাইয়েরা, এখন এই হাসিনা-খালেদাদের ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কি?
যদি তারা কুফরী করছে মনে করে থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও ক্বিতাল করছেন না কেন?
আর যদি তারা কুফরী করেনি মনে করে থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এত আন্দোলন, জ্বালাও-পোড়াও - এসবের মানে কি?
জামায়াত ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের ভাইরা, দয়া করে সুস্পষ্টভাবে উত্তর দিবেন। https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1409437959321419&set=a.1392468937684988.1073741828.100007656849525&type=1&stream_ref=10
জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাইদের কাছে প্রশ্নঃ